ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য

বাংলা ব্লগফ্রিল্যান্সিং৬ জুলাই, ২০২১

ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য

ফ্রিল্যান্সিং কে পেশা হিসেবে বলার একটা ট্র্যাডিশন অনলাইন কমিউনিটিতে প্রচার হয়েই আছে, তার মধ্যে কিছু পন্ডিত ভাই-ব্রাদার আবার আদর করে এটাকে আউটসোর্সিং বলেও প্রচার করে থাকে। কিছু টেক জার্নালিস্ট, ইভেন কিছু সরকারের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তারাও এই সেক্টরটাকে আউটসোর্সিং বলে প্রচার করে। ফ্রিল্যান্সিং ওয়ার্ডটাকে কে মোটামুটি মেনে নেয়া যায়, কিন্তু আউটসোর্সিং শব্দটা যে সম্পুর্ন উল্টো, এটা কেউ জানার চেস্টাও করে না।

ফ্রিল্যান্সিং ওয়ার্ডটা নিয়ে চুলকানিটা (ভালোভাবে নিন, আমারও চুলকায়) একটু বেশীই অনলাইন কমিউনিটিতে। সেটা নিয়ে আরেকটা ব্লগ লেখার ইচ্ছা আছে। এখানে সেটা নিয়ে খুব বেশীকিছু বলবো না। এখানে ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং এর পার্থক্যটাই আলোচ্য বিষয়।

ফ্রিল্যান্সিংঃ

অনলাইন জগতের ট্রেন্ডি একটা ওয়ার্ড ফ্রিল্যান্সিং। বাচ্চা-বুড়ো সবাই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চায়। ফ্রিল্যান্সিং যে শেখার কিছু না এটা অনেককেই বুঝাতে পারি নি আমি। ফ্রিল্যান্সার/মুক্তপেশা শব্দের আবিধানিক অর্থ কি জেনে নিইঃ

মুক্তপেশা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে মু্ক্তভাবে কাজ করাকে বোঝায়। যারা এধরনের কাজ করেন তাদের বলা হয় “মুক্তপেশাজীবী” বা ফ্রিলেন্সার।

– উইকিপিডিয়া

সুতরাং বুঝা ই যাচ্ছে, যে কারো অধীনে না থেকে মুক্তভাবে কিছু করে সে ই ফ্রিল্যান্সার। আর কাজ করার এই পদ্ধতিটার নাম ফ্রিল্যান্সিং।

এখানে উল্যেখ্য যে, কাজ করার পদ্ধতিটার নাম হলো ফ্রিল্যান্স বা ফ্রিল্যান্সিং, ফ্রিল্যান্সিং কিন্তু কোন পেশা নয়। আপনি ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হতে পারেন, আপনি ফ্রিল্যান্স সিএনজি চালক হতে পারেন, কিংবা ফ্রিল্যান্স ওয়েব ডেভেলপারও হতে পারেন। এখানে আপনার পেশা হবে, ফটোগ্রাফার, সিএনজি চালক কিংবা ওয়েব ডেভেলপার। যাই হোক, আপনি নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচয় দিবেন কি দিবেন না, সেটা এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় না। অন্য কোন পোস্টে এটা নিয়ে আলোচনা করবো।

আউটসোর্সিংঃ

এবার আসি ভুলে ভরা শব্দে। বাংলাদেশে আউটসোর্সিং শব্দটির ব্যবহার হয় ফ্রিল্যান্সিং শব্দের সমার্থক শব্দ হিসেবে। কেউ বলে ফ্রিল্যান্সিং করি, কেউ বলে আউটসোর্সির করি। কিন্তু আউটসোর্সিং শব্দটি আসলে ফ্রিল্যান্সিং এর সম্পুর্ন উল্টো। আউটসোর্সিং এর সঠিক অর্থ হলো, একজন ফ্রিল্যান্সার যার বা যেই কোম্পানির জন্য কাজ করছে, সেই মানুষ বা কোম্পানির জন্য এই কাজটা আউটসোর্সিং।

ব্যবসা ক্ষেত্রে বহিঃউৎসায়ন বা আউটসোর্সিং (ইংরেজি: Outsourcing) বলতে এমন এক ধরনের ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যার মাধ্যমে কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার কোনও কাজ (পণ্য বা পণ্যের অংশবিশেষ উৎপাদন বা সেবা) চুক্তির মাধ্যমে বাইরের দ্বিতীয় কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করিয়ে নেয়।

– উইকিপিডিয়া

ধরুন আপনার কোম্পানির কোন প্রজেক্টে আপনার কর্মচারিদের দিয়ে একটি কাজ করানো সম্ভব হচ্ছে না, তখন আপনি অন্য কোন কোম্পানি বা ব্যাক্তিকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নিলেন, এটাই আউটসোর্সিং। আর যেই কোম্পানি বা ব্যাক্তি কাজটা করছেন, তার জন্য এটা ফ্রিল্যান্সিং।

এই হলো ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর পার্থক্য। আমরা যারা অনলাইনে কাজ করি, আমরা কেউ ই আউটসোর্সিং করি না। আমরা হলাম ফ্রিল্যান্সার, আর যারা আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেয় তারা মুলত আউটসোর্সিং করে।

এই টপিকের আরও কিছু পোস্টঃ

© সোলায়মান হায়দার