ফ্রিল্যান্সিং এর টুকরো গল্প [৩] – অন-স্ক্রিন কীবোর্ড দিয়ে প্রোগ্রামিং

বাংলা ব্লগফ্রিল্যান্সিং এর টুকরো গল্প২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ফ্রিল্যান্সিং এর টুকরো গল্প [৩] – অন-স্ক্রিন কীবোর্ড দিয়ে প্রোগ্রামিং

সময়টা ২০১১-২০১২ দিকের, প্রোগ্রামিং মোটামুটি শিখে গেছি কিন্তু কাজ শুরু করি নি। ইন্টারনেট ঘেটেঘেটে কোডিং তো শিখেছি, কিন্তু ক্যারিয়ার রোডম্যাপ সাজানোর সাজেশন দেয়ার মতো কেউ ছিলো না। অর্থাৎ, টাকার মুখ দেখিনি তখনো। এক ফুফাতো ভাইয়ের কাছ থেকে ধার করে কম্পিউটার কিনে দিয়েছিলো আম্মু, সো সাইবার ক্যাফেতে কিংবা পাড়ার ফটো স্টুডিওতে গিয়ে সারাদিন বসে থাকার দিন শেষ হয়েছিলো। কিন্তু কম্পিউটার যে রেগুলার টাকা খায় সেইটা আম্মু তো জানতোই না, আমিও হয়তো ভুলে গেছিলাম।

এইচটিএমএল, সিএসএস, আর টুকটাক পিএইচপি শেষ করে জাভাস্ক্রিপ্ট শুরু করতেছি অই সময়টায়, হঠাত একদিন কীবোর্ডটা নস্ট হয়ে গেলো। নস্ট হইছে কীবোর্ড, আর কাজ করা বন্ধ করেছিলো আমার মাথা। আম্মুর কাছে টাকা চাইলে অবশ্যই ম্যানেজ করে দিতো। কিন্তু ১২০০ টাকা বেতনের স্কুল টিচার মায়ের কাছে প্রতিমাসে কয়েকশো টাকার ইন্টারনেট বিল নেয়ার পর আবার কীবোর্ড কিনে দিতে বলার সাহসটা আমার হয় নি।

কয়েকদিন কোডিং বন্ধ রাখলাম। ইন্টারনেট সার্ফ করতে করতে হঠাত টেকটিউনে জানলাম অনস্ক্রিন কীবোর্ডের কথা। হাতে আকাশ পেলাম আমি। এখন কীবোর্ড এর কী একটু এমন তেমন হলে কোড করতে মন চায় না, আর সেদিন স্ক্রিনে মাউসের কার্সর দিয়ে কী প্রেস করে যেই শান্তিটা পেয়েছিলাম তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

পরের মাসে কীবোর্ড কিনে ফেলেছিলাম। রবির একটা নাইট প্যাকেজ ছিলো, রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত, সেই প্যাকেজ নিয়ে টাকা বাচিয়েছিলাম, সেই টাকায় কীবোর্ড কিনেছিলাম। সেই মাসে প্রতিদিন রাত ১২ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্লগ অফলাইন করে রাখতাম, আর সারাদিন সেই ব্লগগুলি পড়ে কোড করতাম।

মাউস নিয়েও এমন একটা কাহিনী আছে আমার লাইফে, সেই কাহিনীতে একজন অনেক সুন্দর মনের মানুষ রয়েছে। নেক্সট ব্লগে আ ব্রোকেন মাউসের কাহিনী লিখবো ইনশাআল্লাহ।

এই টপিকের আরও কিছু পোস্টঃ

© সোলায়মান হায়দার