সোলায়মান হায়দার

কম্পিউটার ভাইরাস অনেকটা রিয়েল ওয়ার্ল্ড এর Flu ভাইরাসের মতো। কম্পিউটার ভাইরাস এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে এটি নিজেকে ক্লোন করতে পারে এবং এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে কপি করতে পারে। কম্পিউটার ভাইরাস কোন ফাইল বা ডকুমেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন কম্পিউটারে ছড়িয়ে পরে।

সহজ কথায় বলতে গেলে কম্পিউটার ভাইরাস এমন একটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যা কম্পিটারের ক্ষতি করার জন্য তৈরি করা হয় বা লেখা হয়। এটি নিজেকে আক্রান্ত কম্পিউটারের ফাইল এবং ডকুমেন্ট এর সাথে নিজেকে এটাচ করে নেয়, ফলে এটী অন্যান্য কম্পিটারে সহজেই ছড়িয়ে পরতে পারে। বেশীরভাগ কম্পিউটার ভাইরাস এর মুল কাজ হল কম্পিউটারের ফাইলগুলিকে করাপ্ট করে ফেলা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা।

কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে আক্রমন করে?

কম্পিউটার ভাইরাস এর প্রোগ্রামাররা তাদের তৈরি করা ভাইরাসকে কোন ফাইল কিংবা সফটওয়্যার এর সাথে এটাচ করে সেই ফাইল বা সফটওয়্যারটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। সেই ফাইল বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভাইরাসটি বিভিন্ন কম্পিউটারে ছড়িয়ে পরে। কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করেই কিন্তু তার কাজ শুরু করতে পারে না। এটিকে অপেক্ষা করতে হয় যতখন না ইউজার এফেক্টেড সফটওয়্যার বা ফাইলটি রান করে। এফেক্টেড ফাইলটি রান করার সাথে সাথেই ভাইরাস তার নিজের কাজ শুরু করে দেয়। কম্পিউটারে ভাইরাসটি এক্সিকিউট হলে এটি সেই কম্পিউটারের বিভিন্ন ফাইলে নিজেকে এটাচ করে নেয়, ফলে সেই ফাইলগুলির মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পরে। এমনকি কিছু কিছু ভাইরাস এফেক্টেড কম্পিউটার এর নেটওয়ার্কের অন্যান্য কম্পিউটারগুলিতেও ছড়িয়ে পরতে পারে।

কম্পিউটার ভাইরাস মুলত কম্পিউটারের ফাইল করাপ্ট করে ফেলে, ফাইল মুছে ফেলে, ব্রাউজারে সেভ করা পাসওয়ার্ড চুরি করে, ডাটা চুরি করে, কি-বোর্ড ট্র্যাক করে, ইমেইল কন্ট্যাক্টগুলিতে স্প্যামিং করে, ইত্যাদি। এমনকি কিছু কিছু ভাইরাস হার্ড-ডিস্কের স্থায়ী ক্ষতিও করতে পারে।

কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে ছড়িয়ে পরে?

মডার্ন কম্পিউটিং জগতে কম্পিউটার ভাইরাস ছড়িয়ে পরার অনেক মাধ্যম রয়েছে। যেমন, ইমেইল, মেসেজ এটাচমেন্ট, ইন্টারনেট ফাইল ডাউনলোড, সোশ্যল মিডিয়া স্ক্যাম লিঙ্ক, ইত্যাদি। তাছাড়া, স্মার্টফোনে থার্ডপার্টি এপ্লিকেশন এর মাধ্যমেও মোবাইল ফোনে ভাইরাস ছড়িয়ে পরে। বর্তমানে ভাইরাস ছড়ানোর সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হল সোশ্যল মিডিয়া। ফানি ইমেজ, গ্রিটিং কার্ড, অডিও, ভিডিও, ইত্যাদি জিনিশের ছদ্মবেশে ভাইরাস ছড়িয়ে পরে।

কিভাবে কম্পিউটার ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকবেন?

প্রথমেই বলেছি কম্পিউটার ভাইরাস অনেকটা রিয়েল ওয়ার্ল্ডের ভাইরাসের মতো। এটি কোন কোন সময় ভয়াবহ রুপ নিতে পারে। আপনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস নিমিষেই শেষ করে দিতে পারে একটি সামান্য কম্পিউটার ভাইরাস। তাই কম্পিউটার ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে আপনাকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।

কম্পিউটারে অবশ্যই এন্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার করুন। ফ্রিতে অনেক ভালো ভালো এন্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম পাওয়া যায়। যেকোনো একটি ব্যবহার করুন। পরিচিত কোন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো পাঠানো ইমেইল এটাচমেন্ট, মেসেজ এটাচমেন্ট, লিঙ্ক ওপেন করবেন না। ইন্টারনেট থেকে আজেবাজে সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইন্সটল করবে না। এক্ষেত্রে আপনি এপস্টোর থেকে সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারেন। সকল অপারেটিং সিস্টেমেই এপস্টোর আছে আর সেখানকার সব সফটওয়্যার ই ভাইরাসমুক্ত।

কম্পিউটার ভাইরাস ম্যালওয়ারের বিভিন্ন ধরনের একটি ধরন মাত্র। এন্টিভাইরাস কখনই একটি কম্পিউটারকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত করতে পারে না। এর জন্য সবচেয়ে বেশী দরকার ইউজারের সচেতনতা।

পোস্টের মন্তব্যগুলি

কমেন্ট লোড হচ্ছে...

এই ধরনের আরও পোস্ট

ওয়ার্ডপ্রেসের স্লাইডার রেভুলেশন প্লাগিনে মারাত্মক সিকিউরিটি বাগ

৯ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

ওয়ার্ডপ্রেসের স্লাইডার রেভুলেশন প্লাগিনে মারাত্মক সিকিউরিটি বাগ

সবাইকে একটা বাগ সম্পর্কে অবহিত করছি, স্লাইডার রেভুলেশন প্লাগিনে একটা মারাত্মক সিকিউরিটি বাগ আছে। আমি এটি কয়েকমাস আগে জানলেও বলিনি, কারন আমি মনে করেছিলাম প্লাগিন ডেভেলপাররা বাগটি ফিক্স করবে। আমি তাদের নোটিস ও করেছি… কিন্তু এখনো ঠিক হয় নি। আমি মোটামুটি ভুলেই গিয়েছিলাম, কিন্তু আজকে গোড্যাডি থেকে নোটিস আসার পর মনে পড়লো যে, এটি এখনো…

ফেসবুক কিভাবে আমাদের ভিজিট করা ওয়েবসাইটের হদিস পায়?

৬ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

ফেসবুক কিভাবে আমাদের ভিজিট করা ওয়েবসাইটের হদিস পায়?

একটা জিনিস নিয়ে আমি বেশ কিছুদিন ধরে অনেককে দেখছি যে, ফেসবুকের অ্যাড টারগেটিং নিয়ে প্রশ্ন করছেন। মানে, আপনি অ্যামাজনে একটা ল্যাপটপ দেখে আসলেন, ফেসবুকে ঢুকে সেম প্রোডাক্টের অ্যাড দেখলেন। ব্যাপারটা ভয়ের, তাহলে কি আপনি কোন কোন ওয়েবসাইটে কি কি করছেন তা সব ফেসবুক জেনে যাচ্ছে? আসল ব্যাপারটা হল, ফেসবুক ডাটা টা পায় এডভারটাইজারের কাছ থেকে।…

পাস কী (Passkeys) – পাসওয়ার্ডের দিন কি শেষ?

৫ মাস আগে পোস্ট করা হয়েছে

পাস কী (Passkeys) – পাসওয়ার্ডের দিন কি শেষ?

অনলাইন এক্টিভিটিতে বিভন্ন সাইটে লগইন করা সাধারণ বিষয়। আর এইসব লগইন ক্রেডেনশিয়াল লিক হওয়াও এখন সাধারণ বিষয়। প্রতিদিন হাজার হাজার একাউন্ট লগইন ইনফরমেশন হ্যাক হচ্ছে বা লিক হচ্ছে। এই পাসওয়ার্ড লিক সমস্যার সমাধান করতে গুগল, এপল, মাইক্রোসফট সহ বড় বড় জায়ান্ট কোম্পানি মিলে নিয়ে আসছে ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড অথেনটিকেশন মেথড পাসকী। ট্র্যাডিশনাল পাসওয়ার্ডের বিকল্প হিসেবে অনলাইন…

দুর্বল ইন্টারনেট কানেকশন

আপনার ইন্টারনেটের ধীরগতির জন্য পেজটি লোড হতে কিছুক্ষণ বেশী সময় লাগছে।