সোলায়মান হায়দার

সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আজকের ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়ালে। আজকে আমরা শিখবো কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে থিম এবং প্লাগিন ইন্সটল করা যায়। তার আগে থিম এবং প্লাগিন সম্পর্কে কিছু আলোচনা করে নিব।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম কি?

ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের প্রাণ হল থিম। একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে কি কি ফিচার থাকবে এবং ডিজাইনটা কেমন হবে টা নির্ভর করে থিমের উপর। ওয়ার্ডপ্রেস থিম একটি এক্সটারনাল ফাইল, যা ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার পরে আপলোড করতে হয়। ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার সময় ওয়ার্ডপ্রেসের ২-৩ টি ডিফল্ট থিম দেয়া থাকে, যা আপনার চাহিদা মেটাতে অক্ষমও হতে পারে কিংবা সেগুলির ডিজাইন আপনার কাছে নাও পছন্দ হতে পারে। তাই আপনাকে ব্যবহার করতে হবে এক্সটারনাল থিম, যা আপনি কোনো থিম ডেভেলপার এর কাছ থেকে বানিয়ে নিতে পারেন অথবা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।

ইন্টারনেটে থিম কিনতে পাওয়া যায়, যেখানে বাঘা বাঘা ডেভেলপাররা থিম তৈরি করে বিক্রির জন্য রেখেছেন। অথবা অনেকে ফ্রিতে থিম দেয়, যেমন ওয়ার্ডপ্রেসের নিজস্ব থিম ডাইরেক্টরি থেকে ১৯৪৬ এর অধিক থিম ফ্রিতে ডাউনলোড করতে পারবেন এবং আপনার সাইটে ব্যবহার করতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডাইরেক্টরি এখানে

ওয়ার্ডপ্রেসের এই থিম ফিচারটি থাকার ফলে ওয়েবসাইটকে মনের মত সাজিয়ে তোলা যায় এবং বিভিন্ন ফিচার তৈরি করা যায়। যা অবশ্যই একটি ইউজার ফ্রেন্ডলি।

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি?

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন হল ওয়ার্ডপ্রেসের এমন একটি সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে নতুন নতুন ফিচার এবং ফাংশন যোগ করতে পারবেন। থিমের মতই প্লাগিনও ওয়ার্ডপ্রেস সেটাপের পর আপলোড করতে হয়। আপনি হয়ত আপনার সাইটে একটি নতুন ফিচার বা ফাংশন যোগ করতে চাচ্ছেন, যেমনঃ আপনি চাচ্ছেন এমন একটি অপশন রাখতে চাচ্ছেন যার মাধ্যমে ভিজিটররা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। এই কাজটি আপনি যদি কোডিং এর মাধ্যমে করতে চান তাহলে আপনার কোডিং সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান থাকতে হবে। কিন্তু আপনি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিনের মাধ্যমে এটি খুব সহজেই করতে পারবেন কোন কোডিং জ্ঞান ছাড়াই। একেকটিওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন মূলত একেকটি ফাংশন এর স্নিপেট, যা কোন কোডার একটি ফাংশন তৈরি করেছে এবং সে কোডটি প্লাগিনের মাধ্যমে অন্যের ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়েছে।

অর্থাৎ, আপনি আপনার সাইটে একটি নতুন ফিচার যুক্ত করার জন্য যে কোডগুলি লিখতেন, সেগুলি আগেই কোন ডেভেলপার লিখে রেখেছেন। যা আপনি প্লাগিনের মাধ্যমে আপনার সাইটে যুক্ত করতে পারবেন। এমন কোন কাজ নেই যে আপনি প্লাগিনের মাধ্যমে করতে পারবেন না।

থিমের মত প্লাগিনও কিনতে পাওয়া যায় কিংবা ফ্রিতে পাওয়া যায়। প্লাগিনের জন্য ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে ২৬,৫০০ এর অধিক প্লাগিন সমৃদ্ধ ফ্রি ডাইরেক্টরি। ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ডাইরেক্টরি এখানে

আশা করি ওয়ার্ডপ্রেস থিম এবং প্লাগিন সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা পেয়েছেন। পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এখন তাহলে দেখা যাক কিভাবে থিম এবং প্লাগিন ইন্সটল করবেন।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম ইন্সটল পদ্ধতি

ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডাইরেক্টরি অথবা অন্য কোন জায়গা থেকে একটি পছন্দমত থিম ডাউনলোড করে নিন। এখন আপনার ওয়েবসাইটের ড্যাসবোর্ডে লগিন করুন। তারপর নিচের ধাপ গুলি সম্পন্ন করুনঃ

  • Appearance থেকে Theme মেনুতে যান।
  • Install ট্যাব এ ক্লিক করুন।
  • এখানে কয়েকটি অপশন দেখতে পাবেন (Search | Upload | Featured | Newest | Recently Updated) Upload এ ক্লিক করুন।
  • এখানে আপনাকে থিমটি ব্রাউজ করতে বলবে। Browse এ ক্লিক করে থিমটি ধরিয়ে দিন।
  • এবার আপলোড বাটনে ক্লিক করুন এবং আপলোড শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
  • সম্পূর্ণ আপলোড শেষ হলে Active বাটনে ক্লিক করুন।
  • থিমটি সফল ভাবে ইন্সটল হয়ে গেছে, এখন আপনি সাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন।
  • থিমে যদি কোন এডভান্স অপশন থাকে, তাহলে Appearance মেনুর ভিতরে আরেকটি নতুন মেনু দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনি থিমের ফিচারগুলি কন্ট্রোল করতে পারবেন।

এই হল ওয়ার্ডপ্রেস থিম ইন্সটল। খুব সহজ মনে হচ্ছে না? আসলে ইন্সটল করার সময় আরও সহজ মনে হবে।

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ইন্সটল পদ্ধতি

থিম তো ইন্সটল হল, এবার তাহলে চলুন কয়েকটা প্লাগিন ইন্সটল করে আসি। আপনার প্রয়োজনীয় প্লাগিন ডাউনলোড করে নিন। ড্যাসবোর্ডে যান এবং নিচের ধাপগুলি অনুসরন করুন।

  • Plugin মেনু থেকে Add new তে যান।
  • Upload অপশনে ক্লিক করুন।
  • ব্রাউজ করে প্লাগিনটি দেখিয়ে দিন এবং আপলোড এ ক্লিক করুন।
  • আপলোড শেষে Active করুন।
  • এখন একেক প্লাগিন একেক সিস্টেমে কনফিগার করতে হয়, তাই প্লাগিন এর ডকুমেন্টেশনটা অবশ্যই পরে নিন এবং প্লাগিনটা কনফিগার করে নিন।

পরবর্তীতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্লাগিন কনফিগার করার নিয়মাবলী দেয়া হবে।

পোস্টের মন্তব্যগুলি

কমেন্ট লোড হচ্ছে...

এই ধরনের আরও পোস্ট

ওয়ার্ডপ্রেস কি? এবং এর সুবিধা সমূহ

৯ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

ওয়ার্ডপ্রেস কি? এবং এর সুবিধা সমূহ

ওয়ার্ডপ্রেস বর্তমান সময়ের বহুল ব্যবহৃত এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। ওয়ার্ডপ্রেস এমন একটি সিএমএস যার মাধ্যমে খুব সহজেই যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট এবং ব্লগ তৈরি করা যায়। এটি ওপেনসোর্স সফটওয়ার হওয়ায় বিশ্ব দরবারে অধিক জনপ্রিয়। ওয়ার্ডপ্রেস এর জন্মের ইতিহাসঃ ওয়ার্ডপ্রেস এর সস্ট্রা হলেন ম্যাট মুলেনওয়েগ। তিনি ২০০৩ সালের ২৭ শে মে মাসে সর্বপ্রথম ওয়ার্ডপ্রেস প্রকাশ…

ওয়ার্ডপ্রেসের স্লাইডার রেভুলেশন প্লাগিনে মারাত্মক সিকিউরিটি বাগ

৯ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

ওয়ার্ডপ্রেসের স্লাইডার রেভুলেশন প্লাগিনে মারাত্মক সিকিউরিটি বাগ

সবাইকে একটা বাগ সম্পর্কে অবহিত করছি, স্লাইডার রেভুলেশন প্লাগিনে একটা মারাত্মক সিকিউরিটি বাগ আছে। আমি এটি কয়েকমাস আগে জানলেও বলিনি, কারন আমি মনে করেছিলাম প্লাগিন ডেভেলপাররা বাগটি ফিক্স করবে। আমি তাদের নোটিস ও করেছি… কিন্তু এখনো ঠিক হয় নি। আমি মোটামুটি ভুলেই গিয়েছিলাম, কিন্তু আজকে গোড্যাডি থেকে নোটিস আসার পর মনে পড়লো যে, এটি এখনো…

কোনও প্লাগিন ছাড়াই ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের কমেন্ট স্প্যাম বন্ধ করুন

৮ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

কোনও প্লাগিন ছাড়াই ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের কমেন্ট স্প্যাম বন্ধ করুন

স্প্যাম কমেন্ট বন্ধ করার জন্য ইন্টারনেটে এবং ওয়ার্ডপ্রেস ডাইরেক্টরিতে অনেক প্লাগিন আছে। আপনি সেই প্লাগিনগুলি ব্যবহার করে সহজেই স্প্যাম কমেন্ট বন্ধ করতে পারবেন। কিন্তু আপনার যদি কোডিং সম্পর্কে সামান্য ধারনা থাকে, তাহলে সহজেই এই কাজটি করতে পারবেন কোনও প্লাগিন ইন্সটল করা ছাড়াই। সাধারণত স্প্যামাররা কমেন্ট বট এর মাধ্যমে কোনও সাইটের কমেন্ট ফর্ম পূরণ করে কমেন্ট…

রিলিজ হল ওয়ার্ডপ্রেস ৪.০ – এখুনি দেখে নিন নতুন কি কি আছে এই ভার্শনে

৯ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

রিলিজ হল ওয়ার্ডপ্রেস ৪.০ – এখুনি দেখে নিন নতুন কি কি আছে এই ভার্শনে

আজকে রিলিজ হল ওয়ার্ডপ্রেস এর নতুন ভার্শন ৪.০ । যদিও আগে এই ভার্শনের বেটা ভার্শন বের হয়েছিল, কিন্তু আজকে রিলিজ হল পাবলিক ভার্শন। যা সবার জন্য ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত। দারুন কিছু ফিচার যুক্ত হয়েছে নতুন এই ভার্শনে। ওয়ার্ডপ্রেসের এই ভার্শনের কোড নেম হলঃ “Benny”. চলুন দেখে নেয়া যাক এই ভার্শনের নতুন কিছু ফিচারগুলি… মিডিয়া লাইব্রেরী…

কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস পোষ্ট রিভিশন বন্ধ করবেন?

৯ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছে

কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস পোষ্ট রিভিশন বন্ধ করবেন?

ওয়ার্ডপ্রেস এর একটি দারুন ফিচার হল পোষ্ট রিভিশন। এটির মাধ্যমে আপনি পোষ্ট এডিট করার পরও পূর্বের পোষ্টে ফিরে যেতে পারবেন, অনেকটা “Ctrl+Z” এর মত। অনেকেই মনে করেন যেহেতু এটি একটি পোষ্টের অনেকগুল ভারশন সেভ করে রাখে, সেহেতু এটি সাইট স্লো বা ধীরগতির করে ফেলবে। ওয়ার্ডপ্রেস এর মতো জনপ্রিয় একটা সিএমএস এ এরকম একটা মারাত্মক ভুল…

দুর্বল ইন্টারনেট কানেকশন

আপনার ইন্টারনেটের ধীরগতির জন্য পেজটি লোড হতে কিছুক্ষণ বেশী সময় লাগছে।